আমার নাম আরমান হাসান তুহিন।
এখন নবম শ্রেণীতে পড়ি। কিন্তু গল্পটা তিন বছর আগের মানে ষষ্ঠ শ্রেণির। সমাপনীতে আলহামদুলিল্লাহ ভালো রেজাল্ট করে নিজেকে মোটামুটি বাঘের বাচ্চা মনে করছিলাম। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে আমি নিতান্তই খুবই ভদ্র একটা ছেলে হিসেবে আমার খ্যাতি আছে।
আমার প্রাণপ্রিয় ভদ্র বন্ধু বান্ধব গুলো মাঝে মাঝে স্কুল ফাঁকি দিতো। কেউ দেয়াল টপকিয়ে বা কেউ বারান্দা দিয়ে ব্যাগ ফেলে দৌড় দিত। কিন্তু যেহেতু আমি ভদ্র! তাই এগুলো দিকে খুব একটা মন ছিল না। কিন্তু কথায় আছে না? সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে। বন্ধুদের দেখে আমারও একদিন স্কুল পালানোর শখ জাগলো।
প্রথমে আমার একটু ভয় পাচ্ছিলাম। যেহেতু, নিজেকে বাঘের বাচ্চা মনে করতাম তাই আমি কোন ধরা না খেয়েই প্রথমদিন গেট দিয়েই চলে গেলাম। ভয়ও কমে গেলো। এমন তিন দিন হল। এখন ভয় মোটামুটি নেই বললে চলে। যেহেতু সমাজ আর ধর্ম পিরিয়ড আমার অনেক বোরিং লাগতো, তাই আমার এমন বন্ধুদের সাথে সঙ্গ দেওয়ার ইচ্ছা ও বেড়ে গেল। কিন্তু সমাজ শিক্ষিকা ছিলেন আমাদের শাহিদা ম্যাম। বাবাগো, আমি বাঘ হলে তিনি সিংহী। বিরক্তিকর ক্লাসের হাত থেকে বাঁচতে টিফিনের সময় ব্যাগ নিয়ে সোজা আগের মতো বেরিয়ে গেলাম রাস্তায়। স্কুলের সামনে দেখা হলো সেই সিংহীর সাথে। আমি উল্টো একদৌড়ে ক্লাসে। জীবনে শেখা সব সুরা ক্লাসে যেয়ে পড়া শেষ। ভয়ে ভয়ে চুপসে বসেছিলাম এককোনে। শুরু হলো শাহিদা ম্যামের ক্লাস। সেদিন পালানোর প্রধান কারণ ছিল, পড়া পড়িনি। ম্যাডাম সোজা আমার দিকে আসলেন পড়া জিজ্ঞেস করতে, এইদিকে আমার আমার কলিজা হাতে চলে আসছে। ঘটনা কি হলে বোঝার আগেই, সোজা ধরে নিয়ে গেলেন প্রধান শিক্ষক এর রুমে। ডাকা হল অভিভাবক। জীবনের মতো স্কুল পালানোর ইচ্ছে শেষ। আম্মুকে আমার সামনে আধাঘন্টা খুব ভালোভাবে ভাষণ শোনালো। আর এই ভাষণে প্রেক্ষাপটে আমার বাসায় স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। এই ছিল আমার স্কুল পালানোর শেষ স্মৃতি।
আল্লাহর নামে এখানেই...শেষ।
−−−−−−−−−−−−−−
➤ কম্পিউটার কম্পোজ্ড - রাকিবুল হাসান সিয়াম
➤ ব্যবস্থাপনায় - খাদিজা আক্তার তানহা (লিজা), সাফিয়া আলী ইল্লিন, নাবিল রাইয়ান, রাকিবুল হাসান সিয়াম
Comments
Post a Comment